আসসালামু আলাইকুম। আজকে আমরা আলোচনা করবো জনপ্রিয় ফ্রীলান্সিং অনলাইন মার্কেটপ্লেস সমূহ নিয়ে। মার্কেটপ্লেস কি এবং কিভাবে এগুলিতে কাজ করতে হয়। এবং কোন মার্কেটপ্লেস কেমন।
মার্কেটপ্লেস কি ?
মার্কেটপ্লেস বলতে এমন একটি প্লাটফর্মকে বুঝায় যেখানে ফ্রীলান্সার একাউন্ট করে আটকে দক্ষতা অনুযায়ী কাজ করবে। মার্কেটপ্লেসের কাজ হলো বায়ার এবং ফ্রীলান্সারদের মাঝে যোগাযোগ ব্যবস্থা করা। অর্থাৎ আপনি যদি ফ্রীলান্সার হন তাহলে আপনি মার্কেটপ্লেস এ একটি ফ্রীলান্সার একাউন্ট খুলবেন এবং বায়ারের কাজ করে অর্থ উপার্জন করবেন।
আর যারা কাজ করিয়ে নিতে চায় অর্থাৎ বায়ার বা ক্লাইন্ট তারা মার্কেটপ্লেস এ বায়ার একাউন্ট খুলবে এবং তার কাজ পোস্ট করবে। যারা যারা কাজ করতে আগ্রহী তারা ওই কাজে বিড করবে। এবং বায়ার যাকে পছন্দ করবে তাকে কাজটি দিবে।
কাজ পাওয়ার পর ফ্রীলান্সার নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করে বায়ারের নিকট কাজ জমা দিবে। এয়ার যদি কাজটিকে পছন্দ করে তাহলে সেটা গ্রহণ করবেন। আর পছন্দ না হলে ফ্রীলান্সারকে আবার ভালোভাবে করে দিতে বলবে।
আর যদি কাজ পছন্দ হয় আর কাজটি গ্রহণ করে তাহলে আপনার অর্ডার সম্পন্ন হবে এবং আপনি ওই কাজের যে বাজেট ছিল সেটা আপনার একাউন্টে পাবেন। তবে একেক মার্কেটপ্লেস এর সার্ভিস চার্জ একেক রকম। আপনার ইনকামের ২% থেকে সর্বোচ্চ ২০% পর্যন্ত কেটে নিতে পারে। বাকি টাকা আপনার একাউন্টে জমা হবে। যা আপনি বিভিন্নভাবে তুলতে পারবেন।
জনপ্রিয় মার্কেটপ্লেসের তালিকা :
১। আপওয়ার্ক
ফ্রীলান্সিং মার্কেটপ্লেসের সব টয়হেকে জনপ্রিয় মার্কেটপ্লেস হলো আপওয়ার্ক। এ মার্কেট প্লেস ১০ বছরের বেশি সময় ধরে আছে। প্রতিদিন আপওয়ার্কে হাজার হাজার কাজ পাবলিশ হয়। আপওয়ার্কের পূর্বের নাম ছিল ওডেক্স। বর্তমানে ওডেক্স থেকে পরিবর্তন করে নাম রাখা হয়েছে আপওয়ার্ক।
সব থেকে বেশি ফ্রীলান্সার আপওয়ার্ক মার্কেটপ্লেসে কাজ করে। এ মার্কেটপ্লেস এ অনেক সুবিধা রয়েছে। আপনি ১০০ ডলার হলেই আপনার লোকাল ব্যাংক একাউন্ট কিংবা পেওনিয়ার একাউন্টে টাকা তুলতে পারবেন।
তবে বর্তমানে আপওয়ার্ক এ কিছু অসুবিধা দেখা দিয়েছে। যেমন আপনি ঘন ঘন কাজে বিড করলে আর যদি কাজ না পান তাহলে আপনার একাউন্ট নষ্ট করে দেয়া হবে। আবার অনেক ফ্রীলান্সার একাউন্ট হওয়ায় বর্তমানে কাজ পাওয়ার প্রতিযোগিতা অনেক বেশি। নতুনদের কাজ পেতে অনেক সময় লাগে। সহজে কাজ পাওয়া যায় না।
তারপরেও আপওয়ার্ক বিশ্বের ১ নাম্বার ফ্রীলান্সিং মার্কেটপ্লেস। এ মার্কেটপ্লেসে একবার ক্যারিয়ার গড়তে পারলে আর ফায়ার তাকাতে হবে না। কেননা এখন থেকে বাংলাদেশের লাখ ফ্রীলান্সার লক্ষ লক্ষ ডলার ইনকাম করেছে।
২। ফাইবার
ফ্রীলান্সিং জগতে ফাইবার একটি জনপ্রিয় নাম। এ মার্কেট প্লেস বর্তমানে খুবেই জনপ্রিয়। এর একটা কারণ আছে। ফাইবার মার্কেটপ্লেসে ছোট ছোট কাজ পাওয়া যায়। অর্থাৎ এখানে আপনি সামান্য দক্ষতা থাকলেও ইনকাম করতে পারবেন।
ফাইভারে নিজের সার্ভিসের সকল বিস্তারিত লিখে পোস্ট করতে হয়। এটাকে গিগ বলে। তো আপনি প্রথম অবস্থায় ৭টি গিগ দিতে পারবেন। বায়ার আপনার সার্ভিস বা গিগ পছন্দ হলে আপনাকে অর্ডার দিবে। আপনি নির্ধারিত সময়ে অর্ডার ডেলিভারি দিবেন। বায়ার একসেপ্ট করলে গিগ প্রাইস পেমেন্ট পেয়ে যাবেন।
মজার বিষয় হলো ফাইভারে নূন্যতম ৫ ডলারে গিগ দেয়া যায়। তাই এই মার্কেটপ্লেসে সবার আগ্রহ অনেক বেশি। বায়াররা অল্প বাজেটের মধ্যে তাদের ভালো সার্ভিস পায়। আর ফ্রীলান্সার ও ছোট ছোট কাজ করে সহজে ইনকাম করতে পারে।
অনেকের প্রশ্ন থাকতে পারে ফাইবার এ পেমেন্ট কিভাবে নিবেন। তো ভাইবারে পেমেন্ট নেয়া অনেক সোজা। এখানে পেমেন্ট মেথড আছে। তারমধ্যে জনপ্রিয় হলো পেওনিয়ার। এছাড়াও আপনি পেপালের মাধ্যমে পেমেন্ট নিতে পারবেন। আর আপনার এসব একাউন্ট না থাকলে আপনি খুব সহজে ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে নিতে পারবেন।
৩। ফ্রীলান্সার ডট কম
ফ্রীলান্সার ডট কম ও একটি জনপ্রিয় মার্কেটপ্লেস। এ মার্কেটপ্লেস এ লক্ষাধিক ফ্রীলান্সার কাজ করে। বাংলাদেশের অনেক ছেলে মেয়ে ফ্রীলান্সার মার্কেটপ্লেস এ দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছে। তবে এখানে ৫ ডলার খরচ করে একটা পরীক্ষা দিলে ভালো হয়।
ফ্রীলান্সার ডট কম সাইটে আপওয়ার্ক এর মতো তেমন কঠিন শর্ত নাই। এখানে একাউন্ট ডিজেবল সহজে হয় না। এই মার্কেটপ্লেস থেকে আপনি সহজে আপনার পেপাল একাউন্টে টাকা নিতে পারবেন। অথবা আপনার ব্যাংক একাউন্টে নিতে পারবেন।
উপসংহারঃ
উপরে বর্ণিত তিনটি মার্কেটপ্লেসই খুবেই জনপ্রিয় এবং বিশ্বস্থ। আপনি চাইলেই যেকোনো একটিতে একাউন্ট করে ফ্রীলান্সিং করতে পারেন। আশাকরি আজকে এই পোস্ট আপনার উপকারে লাগছে।
ধন্যবাদ।